একজন জ্ঞানপাপী দূতিয়াল এবং তার বিভ্রান্তিমূলক কথা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,জননেত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরে প্যারিসে আসা নিয়ে একজন দোভাষী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী হামলার কারণে নাকি বর্তমান সরকার মান সম্মান হারিয়ে ফেলেছে! এজন্য ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সফরকালে ফরাসি সরকারের পক্ষে অনুবাদকের কাজ করতে তিনি অনীহা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি তিনি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলেও ধরেছেন।
বলি, ফরাসী দেশে কী অনুবাদকের অভাব পড়েছে?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসছেন ফরাসী সরকারের আমন্ত্রণে, দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় এখানে জড়িত।
পয়সা নিয়ে কেউ যদি কাজে যেতে না চান অন্য কেউ সেই কাজ করবে।
একজন বিদেশী হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলার দৃষ্টতা তিনি দেখান কিভাবে?
ধারণা করি, তিনি পাক-ভারত-বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে খুব বেশী ওয়াকিবহাল নহেন।
শুধুমাত্র ধর্মীয় উন্মাদনায় (হিন্দু, মুসলিম) ১৯৪৭ সনে ভারত বিভক্ত হয়েছিল।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করি।
কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে আমরা বাঙ্গালী এবং সেখানে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বহুবছর ধরে বিদ্যমান।
মাঝে মধ্যে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য বিভিন্নরকম চক্রান্ত হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র সহ অপ-রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে ধর্মীয় দাঙ্গায় জড়ানোর চেষ্টা অতীতেও হয়েছিল। যেমনটি হয় এবার দুর্গাপূজা চলাকালীন সময়ে।
অপশক্তির উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করে মূলতঃ রাজনৈতিক ফায়দা লুটা এবং বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা।সর্বোপরি বাংলাদেশকে অকার্যকর রাস্ট্রে পরিণত করা কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিস্ট নেতৃত্বের কারনে তারা সফল হয়নি।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বা রাস্ট্র কোনভাবেই হিন্দু বিদ্বেষী নয়। কোন ধরনের ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের বিদ্বেষ নয় বরং সকলের সহ-অবস্হানে সম্প্রীতির বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকার তথা বর্তমান রাস্ট্রের চরিত্র। আপনার এধরণের উস্কানীমূলক লেখা আমাদের দেশের দীর্ঘদিনের সম্প্রীতির বন্ধনে বিভক্তি সৃষ্টি করছে এবং আপনার তথ্যের ঘাটতি রয়েছে।
কোন দেশ-জাতি বা রাস্ট্র সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য কোনভাবেই সমীচীন নয়।
বাংলাদেশ সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানার আগ্রহ থাকলে আমি আপনাকে সহযোগিতা করতে পারি।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, জাতিতে, রাস্ট্রে, হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, বৈষম্য এখনো রয়েছে। আমরা এখনো মানবকূলকে তা থেকে মুক্ত করতে পারি নাই। ফিলিস্তিনের কথা না-ই বা বললাম, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যে পরিমানে ধর্মীয় সহিংসতা হয়, রাস্ট্র যেভাবে ধর্মীয় সহিংসতায় মদদ দেয় তা কি আমরা না দেখার ভাণ করতে পারি?
আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মোহনীয় নেতৃত্ব এবং রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্হাশীল, আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ।
সকল ধরনের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যাবো, এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
আশাকরি আপনার শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
কোনভাবেই কারো প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না।
“” সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর নাই “”
হিন্দু নয়, বৌদ্ধ নয়, খৃষ্টান নয়, মুসলিম নয়, মানব সন্তান হিসাবে আমাদের সকলের এ পৃথিবীতে আগমন।
আপনার/আমার সকলের দায়িত্ব এ পৃথিবীটাকে মানুষের নিরাপদ আবাসস্থল হিসাবে গড়ে তোলা।
কোনধরনের মৌলবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
জয়তু জননেত্রী শেখ হাসিনা।
এম এ কাসেম।
সভাপতি, ফ্রান্স আওয়ামী লীগ।
Leave a Reply