খায়রুল আহসান মানিক: এক জন চিকিৎসকঃ রোগাক্রান্ত মানুষের সেবক? না টাকা কামানোর মেশিন?
নগর কুমিল্লার একটি সরকারি হাসপাতালের এক জন ডাক্তার। বিকেলে তিনি তার প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন। এক জন ব্যক্তি স্ত্রীকে দেখাতে গেলেন তার কাছে। সিরিয়ালে ডাক পড়লে স্ত্রীকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। ডাক্তার সাহেব রোগী দেখে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ লিখে দিলেন প্রেসক্রিপশনে। ভদ্রলোক পরদিন স্ত্রীর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে গেলেন ডাক্তারের চেম্বারে। রিপোর্ট উল্টে পাল্টে দেখে চিকিৎসক ক্ষেপে গেলেন। বললেন সব প্যাথলজির পরীক্ষা আমি বুঝি না। শেষতক কোন ওষুধ না লিখে কাগজপত্র ফিরিয়ে দিয়ে রাগত স্বরে বললেন, আপনি আমার কাছে আর কখনো আসবেন না। রাগের কারণ পরে বুঝা গেল। আসলে তার নিজের প্যাথলজি অথবা তার পছন্দের(!) অন্য প্যাথলজি থেকে পরীক্ষা না করিয়ে ঢাকার একটি স্বনাম খ্যাত প্রতিষ্ঠানের কুমিল্লা শাখায় পরীক্ষা করানোটা তার মনপুত হয়নি। কারণ নিজের প্যাথলজি তে পরীক্ষা না করানোতে ব্যবসা না পাওয়া, পছন্দের প্যাথলজিতে না করার কারণে কমিশন থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তিনি। উল্লেখ্য ঢাকার ওই প্রতিষ্ঠানটি ডাক্তার মহোদয়দের কোন কমিশন না দিয়ে সরাসরি রোগীদের ছাড় দেয়। এ ক্ষেত্রে এটাও তার গা জ্বালার আরেকটি কারণ বলে জানা গেলো । জনগণের টেক্সের টাকায় পড়াশোনা করা চিকিৎসক মহোদয়গণ তার মহান পেশাকে রোগীর তথা আত্ন মানবতার কাজে না লাগিয়ে অতি বাণিজ্যিক করন করলে তাকে সেবকের তকমা দেয়া যায়? সব চিকিৎসক বাণিজ্যিক নন। অমানবিক নন। অর্থ লোভী নন। কিন্ত কিছু সংখ্যক চিকিৎসকের অর্থ লোভ রক্ত চোষা প্রাণীকেও হার মানায়। এই মহৎ পেশায় না এসে অন্য কোন লাভ জনক পেশায় নিয়োজিত হলে অন্ততঃ রোগাক্রান্ত মানুষ তাদের অকল্যান থেকে বেঁচে যেতো।
খায়রুল আহসান মানিক, সিনিয়র সাংবাদিক, কুমিল্লা
Leave a Reply