নারী ইস্যুতে তালেবানকে এবার আগের মতো কঠোর দেখা যাচ্ছে না। রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নেয়ার পরপরই নারী অধিকারের পক্ষে তালেবান নেতারা তাদের অবস্থান কিছু ক্ষেত্রে জানান দিয়েছেন।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের নতুন সরকার গঠনে নারীদের অংশগ্রহণ করতে মঙ্গলবার আহ্বান জানায় তালেবান।
সংগঠনটির এ পদক্ষেপকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন অনেকে। কেননা, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর নারীদের ওপর পীড়ন শুরু করবে, এ ধরনের আশঙ্কা রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। আগের শাসনামলেও কট্টর ধর্মীয় গোষ্ঠীটি আফগানিস্তানের নারীদের ওপর শরিয়া আইন চাপিয়ে দিয়েছিল।
তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগানি বলেন, ‘তালেবান নারীদের ভোগান্তির কারণ হতে চায় না। শরিয়াহ আইন অনুযায়ী তাদের সরকারকাঠামোয় থাকা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের সরকারকাঠামো এখনও পরিষ্কার নয়। তবে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সবার অংশগ্রহণে পুরোপুরি ইসলামি নেতৃত্বেই দেশ পরিচালনা করা হবে।’
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মঙ্গলবার তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল হক হাম্মাদ আফগানিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজে কর্মরত নারী এক সংবাদ পাঠকের কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
একে নারীর প্রতি তালেবানের কিছুটা নমনীয় মনোভাব হিসেবে দেখছেন অনেকে।
আফগান বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায়ী সাদ মোহসেনি টুইটবার্তায় বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে টোলো নিউজের অনুষ্ঠানে উপস্থাপিকা বেহেশতার মুখোমুখি হন তালেবান নেতা। দুই দশক আগে এ ধরনের ঘটনা ভাবাই যেত না।’
এদিন জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, তালেবানের কয়েকজন নেতা নারীশিক্ষার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
ইউনিসেফের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের কয়েকটি অঞ্চলে তালেবান প্রতিনিধিরা মেয়েদের শিক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
আফগানিস্তানে ইউনিসেফের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমের প্রধান মুসতাফা বেন মেসাউদ জানান, নারীশিক্ষার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনার অপেক্ষা করছেন স্থানীয় কয়েকজন তালেবান নেতা। ওই নেতারা মেয়েদের স্কুল খোলা রাখার পক্ষে।
জেনেভোয় জাতিসংঘের এক ব্রিফিংয়ে মেসাউদ বলেন, ‘আফগানিস্তানে নারীশিক্ষার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনামলে আফগান নারীদের একা ঘরের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি ছিল না। স্কুলে পড়াও ছিল বারণ।
Leave a Reply