বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

দাওয়াতের ভোজ প্রায় সর্বদায়ই অস্বাস্থ্যকর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৭১ বার

ডা: ইকবাল আনোয়ার :আমাদের দাওয়াতের ভোজ প্রায় সর্বদায়ই অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু কেউ তা সাহস করে পরিবর্তন করেনা। মনে করে এতে তার ইজ্জত যাবে। একা চাইলেও পরিবারের সমর্থন মিলে না।
ইফতারের আয়োজন প্রায়শ ক্ষতিকর। আমি মুড়ি বড়া বুটে ছিলাম। সাথে পানীয় ফল মুল। বড়া বেগুনি ছপ – ছমছা ছেড়ে দেখেছি। একদিন মুড়ি বড়া বুটও ছেড়ে দিয়েছিলাম। মনে হলো যেনো ইফতার করি নি। কোন তৃপ্তি নাই। কি বিপদ!
নানা দেশের ইফতার নানা রকম। আমরা ভাজা পোড়া কোন সুত্রে পেলাম! আমার গবেষণা নেই। পুষ্টি ও রান্নাবিদগন বলতে পারবেন।
তবে পেরেছি তো আমি ও আমার মতো অনেকে, হালিম, বেগুনী আরো কতো কি, তা বাদ দিতে!
এভাবে কম ইফতারী আমাকে আরাম দিয়েছে। পেট ভুর ভুর করেনি, চুনা ঢেক আসেনি। আমার এ অভ্যাস কয়েক বছর ধরেই। দশ বছর হবে। এ পদ্ধতির ভোগান্তি হয় তখন, যখন ইফতারের সময় আচমকা কোনো মেহমান এসে পরেন। তখন জলদী বাজারে যাও ও খোলা খাবার পোড়া তেলে ভাজা, কিনে আনো! তবে কেনো, আমি যা খাই তাকে তা দিতে সংকোচ! উত্তর এ লেখার কোন এক ফাঁকে রয়েছে।
রমজানে পেটের পীড়া বাড়ে। গেষ্টিক বাড়ে। আগে স্টমাক ফুটো রোগী আসতো। আজ নানাবিধ অসুধ এসেছে, ফলে অতোটা যায় না।

এবার ইফতার পার্টি( পার্টি নামটা ইফতারের সাথে যায় না) কম হয়েছে। বিগত বেশ ক বছর হলো, ইফতারের দাওয়াত দিলে অতি অবশ্যই শেষ পদ হিসাবে মোরগ বিরিয়ানি বা কাচ্চি বিরিয়ানি থাকতে হবে, এ নিয়ম বসে গেছে। দেখিনি তা আগে। চোখের সামনেই রেওয়াজের আমদানী হতে দেখেছি। হয়তো কোথাও মিউটেশনের মতো, কেউ কোন শহরে দেওয়া শুরু করেছিলো, তারপর তা সংযোজিত হয় গেছে।

কোথাও বেড়াতে গেলে উপহার কি নিতে হবে, তাতেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমি বই নেই। পয়ষষ্টি সনেও বিয়ের উপহার হিসাবে বই দিতে দেখেছি।

ঈদে কেবল পাঞ্জাবী পেতে পেতে, এবং যা অধিকাংশই গায়ে লাগেনা, পছন্দ হয়না, ভরে গেছে। অথচ আমার প্রয়োজন ভিন্ন কিছু।

আমি আপন জনকে কিছু দিতে চাইলে তাকে জিজ্ঞাসা করি- তোমার কি প্রয়োজন? সরাসরি টাকাও দেই। যেনো সে তার প্রয়োজনীয় জিনিষটি কিনে নিতে পারে।
রোগী দেখতে গেলে টাকা দেওয়াই উত্তম।
আনুষ্ঠানিকতার জন্য মানুষ বাধ্য হয়ে অনেক কিছু করে, নিজের সন্তানকে বঞ্চিত করেও তা করতে হয়; নইলে বদনাম হবে। ঈদে মেহমান বাড়িতে ইফতার পাঠাতে হবে, যৌতুক দিতে হবে, নইলে অপমান।
পরিবারে একটা অসুখ আসলে , সব’চে বেশী অসহায় হয়ে পরে মধ্যবিত্ত। নিম্নবিত্তের ও হত দরিদ্রের তো হয়ই। তারা অবশ্য হাত পাততে পারে। অনেকে এগিয়েও আসে। লজ্জায় মধ্যবিত্ত হাতও পাততে যায় না।
চিকিৎসক মহোদয় পরিক্ষার নাম লিখে দিয়ে খালাস। রোগী সে তালিকা হাতে নিয়ে মরা মাছের চোখে তাকিয়ে থাকে। সে চোখের ভাষা পড়ে ক’জন!

সভ্য দেশে রাষ্ট্র অনেক কিছুর দায়িত্ব নেয়। বিপদ আপদে রাষ্ট্র কতৃক সমান আচরণ অনেক দেশের নাগরিকগন ভোগ করেন। তাই সেখানে টাকা জমানোর দরকার পরে না। দেশে নানা টেক্স দিয়েও নাগরিক তার সুফল পায় না।

মিউটেশনই সব; মানব সভ্যতার পরতে পরতে। তবে কি ভাল’র দিকে যাত্রার কোন মিউটেশন সুভক্ষণে এসে যাবে না!

ডা: ইকবাল আনোয়ার, সাবেক সভাপতি -বিএমএ, কুমিল্লা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2023 DeshPriyo News
Designed By SSD Networks Limited
error: Content is protected !!