তোফায়েল আহমেদ: আজকাল মানুষ ভাইরাল হওয়ার জন্য কতো কী করে! এমন কি ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়েও ভাইরাল হতে পিছপা হয় না অনেকেই।
গেলো দুইদিন ধরে কুমিল্লার লোকাল অনলাইন নিউজ পোস্টাল গুলো একটি পোস্ট প্রচার করছে, যে কুমিল্লার একটি ছেলে পায়ে হেঁটে ২০২৪ সালের হজ্জ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে, এবং সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন, অনেকেই দেখছি পোস্টে শেয়ার করে উৎসাহিত করছেন।
গেল বছর এরকম একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে ভারতের কেরেলা রাজ্যে থেকে মক্কা উদ্দেশ্যে ২০২৩ সালের পবিত্র হজ্ব করার জন্য পায়ে হেটে রওনা দিয়েছেন সিহাব নামক এক যুবক। তাকে পারি দিতে হয়েছে, ৮০৪০ কিঃমিঃ রাস্তা।
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে তার দুই ছেলের উপর ভর করে হেঁটে যেতে দেখে বললেনঃ তার কী হয়েছে? তারা বললেন, তিনি পায়ে হেঁটে হজ্জ করার মানত করেছেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ লোকটি নিজে কে কষ্ট দিক আল্লাহ তা‘আলার এর কোন দরকার নেই। অতঃপর তিনি তাকে সওয়ার হয়ে চলার জন্য আদেশ করলেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৮৬৫
একটু অতিরিক্ত কষ্ট করেই যদি হজ্জ করলে একটু বেশি সওয়াব পাওয়া যেতো, তাহলে হজ্জের কর্তৃপক্ষ যাহারা অত্যন্ত জ্ঞানী ওনারা সাফা পাহাড় থেকে মারওয়া পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তাটি আধুনিকায়ন করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করে দিতেন না।
ইয়োম আরাফা মানে আরাফাতের দিন সকল হাজী গণ আগে যেখানে পায়ে হেটে যাওয়া লাগতো (এখনো যায়) সেখানে অত্যাধুনিক ট্রেন রাউন্ডের ব্যাবস্থা করে দিতেন না।
আপনারা হয়তো লক্ষ করেছেন হজ্জের দিন সম্পুর্ন রাস্তা আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দিচ্ছেন যাতে হাজি সাহেবগনেরা একটু আরামবোধ করেন।
এমনকি আরাফার দিন রোজা রাখার দিন হলেও আরাফাতের ময়দানের উপস্থিত হাজীদের কষ্ট করে রোজা রাখতে মানা করা হয়েছে, যাতে করে হাজীদের কষ্ট বেশি করতে না হয়।
আল্লাহর অশেষ রহমতে ও আল্লাহ আমাকে অসংখ্যবার ওমরা হজ্জ করার ও ইসলামের পবিত্রতম স্হানগুলিতে সফল ও পরিদর্শন করার তৌফিক দিয়েছেন, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে লিখলাম।
যেখানে সহজলভ্য সবকিছু আছে সেখানে সেই সহজলভ্যতা গ্রহণ না করে কঠিনতর রাস্তা বেচে নিতে ইসলাম কখনোই সমর্থন করে বলে আমি মনে করি না।
তোফায়েল আহমেদ, জেদ্দা,সৌদি আরব
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply