বাংলাদেশিসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন অভিবাসন নীতিমালা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী দেশটিতে পিএইচডি ছাড়া অন্য কোনো কোর্সের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নের সময় তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসতে পারবেন না।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানান, এই নতুন পদক্ষেপ অভিবাসীদের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করবে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। আজ বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নতুন ঘোষণায় বলা হয়েছে, চলতি বছর দেশটিতে বৈধ অভিবাসন ৭ লাখের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৮৮টি ভিসা দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের, যা ২০১৯ সালের সংখ্যায় প্রায় ৯ গুণ।
গবেষণা বহির্ভূত কোর্সে বিদেশি স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনতে না পারলে তা অভিবাসীদের সংখ্যা কমাতে কতটা ভূমিকা রাখবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র সচিব সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান বলেন, ‘আমরা যে অভিবাসন কমানোর কথা বলছি, শিক্ষার্থীদের পরিবার আনার নীতি কঠোর করে সেই সংখ্যা আমরা কমাতে পারি। তাই এই নিয়মে কড়াকড়ি আরোপের সময় এসেছে। তবে গবেষণা পর্যায়ের (পিএইচডি) ক্ষেত্রে আবার এই নিয়ম কার্যকর হবে না। উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রচলিত নিয়মেই তাদের স্ত্রী-সন্তানদের নিতে পারবেন।’
সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসার মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তবুও আমাদের দেশের জনগণের জন্য সরকারি পরিষেবা সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে এটি একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’
বর্তমান নিয়মে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কোর্স যদি নয় মাস বা তার বেশি হয়, তাহলে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের নিজের কাছে নিয়ে আসার অনুমতি দেয় যুক্তরাজ্য। কিন্তু সরকার বলছে, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ‘স্পাউস ভিসা’ নিয়ে আসা মানুষের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় বর্তমানে ৯ গুণ বেড়েছে। ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্ভরশীল কোটা বা স্পাউস ক্যাটাগরিতে ১৬ হাজার ভিসা দিয়েছিল দেশটি। গত বছর তা এক লাখ ৩৬ হাজারে উন্নীত হয়েছে।
গত বছর নিয়মিত অভিবাসনে ইস্যু করা চার লাখ ৮৬ হাজার ভিসার মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশটি ছিল শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানুষের অবাধ চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। কিন্তু গত বছর দেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী এসেছেন। এদের বেশিরভাগই হলেন ইউক্রেন, হংকং এবং আফগানিস্তানের রাজনৈতিক সংকট থেকে পালিয়ে আসা মানুষ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিবার অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের সংখ্যাও বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত ও নাইজেরিয়া থেকে প্রচুর সংখ্যক অভিবাসী এসেছেন শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য হিসেবে।
Leave a Reply