মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন

বাদল গ্রেপ্তার, কাদের মির্জা নজরদারিতে

কালের কন্ঠ
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১
  • ৫৫১ বার

দেড়-দুই মাস ধরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার প্রকাশ্য প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তাঁকে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাত ১টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পৌর ভবনে নজরদারিতে ছিলেন কাদের মির্জা। ভবনের সামনে ও আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য মোতায়েন ছিল।

এর আগে গতকাল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে নোয়াখালীর প্রেস ক্লাব এলাকার একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে বাদলকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। তখন পরিবার জানিয়েছিল, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাঁকে তুলে নিয়ে গেছে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জের চাপরাশিরহাট বাজারে আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি মারা যান। এরপর গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আলাউদ্দিন নামের যুবলীগের এক কর্মী মারা যান। এ ছাড়া ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন।

বাদলকে তুলে নেওয়ার ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, কয়েকজন নেতাকর্মীসহ বাদল প্রেস ক্লাবের পশ্চিম পাশের রেড ক্রিসেন্ট মার্কেটের একটি চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস এসে সেখানে দাঁড়ায়। এক মিনিটের মধ্যেই ওই মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন বের হয়ে বাদলকে তুলে নেয়। এরপর মাইক্রোবাসটি জেলা জজ আদালতের সড়ক হয়ে পশ্চিম দিকে শহরের মূল সড়কের দিকে চলে যায়।

মিজানুর রহমান বাদলের ছোট ভাই রহিম উল্যাহ বিদ্যুৎ জানান, তাঁর ভাইকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন কাদের মির্জাকে গ্রেপ্তার করছে না?’

এদিকে মঙ্গলবারের সংঘর্ষের পর বসুরহাট এলাকায় যে থমথমে পরিস্থিতি ছিল, তা গতকাল ছিল অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এখনো কাটেনি। পর্যাপ্ত পুলিশ ও র‌্যাবের টহল অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে বসুরহাট বাজারে দোকানপাট খোলার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করেছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি জানান, মঙ্গলবার রাতের সংঘর্ষে পৌর ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনায় গতকাল সকালে বসুরহাট পৌরসভার নৈশ প্রহরী নুরনবী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে শতাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ এবং শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে।

গতকাল সকালে পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বসুরহাট বাজারে বিভিন্ন স্থান ঘুরেফিরে দেখেন, ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে পৌর ভবনে গিয়ে অফিস করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বসুরহাটের ঘটনায় ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগকে দিয়ে যে তদন্ত করার কথা বলেছেন, তা তিনি মানেন না। এ ছাড়া পুলিশের তদন্তও তিনি মানেন না। তিনি এসব ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, যারা অপরাজনীতি করে তাদের দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে না।

উল্লেখ্য, কোম্পানীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের বিরোধের জেরে গত দেড়-দুই মাস ধরে পুরো উপজেলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনের সময় থেকে বিভিন্ন বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা কাদের মির্জার সমর্থকদের সঙ্গে এরই মধ্যে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের দুবার সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং দুজন নিহত হন।

সূত্র- কালের কন্ঠ

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2023 DeshPriyo News
Designed By SSD Networks Limited
error: Content is protected !!