কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নেই বিনা ভোটে জয়ী হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ১১ ইউপির অধিকাংশ ওয়ার্ড সদস্যও জয় পাচ্ছেন ভোট ছাড়াই।
বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে একাধিক প্রার্থী না থাকায় সব চেয়ারম্যান এবং অধিকাংশ সদস্য পদে নৌকার প্রার্থীরা জয়ী হতে যাচ্ছেন বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস নিশ্চিত করেছে।
বিনা ভোটে জয় পাওয়া প্রার্থীরা হলেন- ১ নম্বর বাইশগাঁও ইউনিয়নে আলমগীর হোসেন, ২ নম্বর সরসপুর ইউনিয়নে আবদুল মান্নান, ৩ নম্বর হাসনাবাদ ইউনিয়নে কামাল হোসেন, ৪ নম্বর ঝলম উত্তর ইউনিয়নে আবদুল মজিদ খান রাজু, ৫ নম্বর ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নে আশিকুর রহমান হিরণ, ৬ নম্বর মৈশাতুয়া ইউনিয়নে মফিজুর রহমান, ৭ নম্বর লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নে মহিন উদ্দিন চৌধুরী, ৮ নম্বর খিলা ইউনিয়নে আল আমিন ভূঁইয়া, ৯ নম্বর উত্তর হাওলা ইউনিয়নে আবদুল হান্নান হিরণ, ১০ নম্বর নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নে আবদুল মান্নান চৌধুরী এবং ১১ নম্বর বিপুলাসার ইউনিয়নে ইকবাল মাহমুদ।
কুমিল্লা-৯ সংসদীয় আসনের মধ্যে পড়েছে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা। এখানকার এমপি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তার আসনে দীর্ঘদিন ধরে ভোট ছাড়াই নৌকার প্রার্থীরা জয় পান বলে অভিযোগ আছে।
১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে লাকসাম উপজেলার ৫ ইউনিয়নের কোনোটিতেই ভোট হয়নি। চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদের ৬৫ প্রার্থীও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এভাবে ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হওয়া নিয়ে সমালোচনা করলে পরোক্ষভাবে তার জবাবও দিয়েছিলেন মন্ত্রী। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের এক অনুষ্ঠানে তাজুল ইসলাম দাবি করেছিলেন, যোগ্য প্রার্থীদের দল মনোনয়ন দেওয়ার পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় লাকসামের ইউনিয়নগুলোতে সবাই বিনা ভোটে পার হয়ে গেছে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি ১১ ইউনিয়নে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনেই সাত ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিলেন। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে নৌকা ছাড়া অন্য ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
চেয়ারম্যান ছাড়াও এসব ইউপিতে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যের ১৪৩টি পদের মধ্যে ১২৯টিতেই বিনা ভোটে জয়ী হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
এদিকে, সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদে ভোট হবে শুধু বিপুলাসার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ঝলম উত্তরের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ও মৈশাতুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে হবে সাধারণ সদস্য পদে ভোট।
এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় আওয়ামী লীগে কোনো কোন্দল নেই, আমাদের ঐক্যের কারণে দলীয় ফোরামে বৈঠক করে একটি সমঝোতায় পৌঁছে একক প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছি, এতে দোষের কিছু নেই।’
অনেকে মনোনয়নপত্র কিনতে ও জমা দিতে পারেননি- এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, এমন অভিযোগ তাদের জানা নেই, কেউ তাকে এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজির হোসেন মিয়া বলেন, ১১ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও নারী সদস্য পদে একক প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকার প্রার্থীরা বিজয়ী হতে যাচ্ছেন। তবে একটি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদে এবং দুটি ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচন হবে। তপশিল অনুযায়ী, আগামী ৩১ জানুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হওয়ার কথা।
ষষ্ঠ ধাপে ইউপি নির্বাচন ভোট হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি।
Leave a Reply