মাসুক আলতাফ চৌধুরী: এখনও মানুষই জিতে আছে ,সাধারণ মানুষ-জনতা। মুনিয়া, জীবন-সংগ্রাম প্রতিবাদে বেছে নিয়েছ মৃত্যু, না এখানেই শেষ নয়। মেনে নেয়নি মানুষ। সংঘবদ্ধ মত প্রকাশ এখন ভিন্নতর- যোগাযোগের সামাজিক মাধ্যম। এতে কেটে গেছে আগের একমূখীতা।
মূলধারার মাধ্যম যা বলতো, তাই সর্বাঙ্গে মেনে নেয়া, এখন আর নয়-এখন শুনতেও হয়। বলা চলে সামাজিক মাধ্যমকেও কখনও কখনও অনুসরন করতে হচ্ছে মূলধারা মাধ্যমকে। এ দু’য়ের বোঝাপড়া বেশ চলছে। এখানেও এখনও জিতে আছে মানুষ। মুনিয়া, সবার না মানা- সংক্ষুব্ধতা এক লক্ষ্যে এগুচ্ছে। প্রতিবাদের সুনামি চলছে। প্রধান গণমাধ্যম পুঁজির পাহারাদার –হাতিয়ার হওয়ায় প্রথম নিশ্চুপ পরে লুকোচুরি -অভিযুক্ত ও তাঁর প্রভাব বলয়ের এ চেষ্টাতো থাকবেই। দমে থাকেনি মানুষ, পিছু নিয়েছে সর্বত্র। জীবনের শেষ ঘটেছে দুপুর-বিকালে। সন্ধ্যায় হয়েছে জানাজানি-কানাঘুষা। হতবিহ্বল বড়বোন-বোনজামাই শোক সামলে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। স্বজন হারানোর কান্না ধীরলয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। রাতভর থানায় দৌড়ঝাঁপ। সাংবাদিক আসেন-যান, কিন্তু নেই সেভাবে সংবাদ প্রচার। এধরনের সংবাদ অবশ্য নিজ থেকে প্রচারিত হয় না । দায়িত্বশীল প্রচারে পক্ষতা লাগে। এতে যথার্থতা দাঁড়ায়। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গভীর রাতে মামলা হলো। যাক এবারতো হয়েছে। পরদিন সকাল-দুপুরে মূলধারা মাধ্যম অস্পস্টতায় ক্ষীণ উচ্চারণে প্রচার করল। পুঁজির সাথে লড়াই, সংঘর্ষ এড়াতে চাইলো। মানুষ আশাহত হলো। মানুষের ক্ষোভ আপোষ-রফা রুখে দিয়ে ,আইনের দ্বারস্থ –মামলায় বাধ্য করলো। একেবারে নিজেদের মালিকানাধীন মাধ্যমগুলোর নির্লিপ্ততায় -জনতার ক্ষোভ ,ব্যক্তি আক্রোশে ফেটে পরে। চতুর পুলিশ আইনী দৃঢ়তায় কথা বলা শুরু করলেন ।
মূলধারা মাধ্যম জনরোষ উপলব্দি শুরু করলো। বিচ্যুতি কাটিয়ে স্বভাব সুলভ -মানুষের পক্ষেই দাঁড়ালো। এমনি হয়। সংবাদ আর মানুষ-এ দু’য়ের এটি চিরায়াত রসায়ন। মতদ্বৈততা হলেও সম্পর্কের একটা জায়গা তৈরি হয়ে যায়- এটাই গণমুখীতা। মানুষ থেমে নেই। এবার মানুষের দৃঢ় অবস্থান আদালতের ন্যায়পরতার প্রভাবক হলো । আগাম জামিন অধিকার হলেও শুনলেন না মাননীয় বিচারকরা । জনগণ আবারও জিতে গেল। অভিযুক্ত (এক বা অধিক ) আইনের আওতায় আসছে-এমন ইঈিতই দিচ্ছে পুলিশ। প্ররোচনার ক্ষেত্রে অভিপ্রায়-দুষ্টুমন ছিল প্রমানে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে কাজ করছে তাঁরা । স্বেচ্ছায় ভাড়া বিমানে দেশ ছাড়তে হল পরিবার-পরিজনের। পুঁজি মানুষের কাছে নতজানু হলো আবারও। মানুষ দেখতে চায় পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে অভিযুক্তকে (এক বা অধিক ) নিয়ে বিচারালয়ে ছুটোছুটি করছে। মানুষকে জেগে থাকতে হবে আশানুরুপ দন্ড হওয়া পর্যন্ত। এক্ষেত্রেও কখনও মানুষ, আবার কখনও সাংবাদিকতা-কেউ আগে আবার কেউ পিছু পিছু – এভাবেই চলবে বরাবরের মতই।
লেখক-সাংবাদিক, কুমিল্লা ৩০ এপ্রিল ২০২১
অসম্ভবরকমের একটি লিখা আজ পরলাম। সত্যি মুগ্ধ।