দলীয় সূত্র বলছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীর আলাম। এ ঘটনার পরপর গাজীপুর মেয়রের শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল বের হয়। রাজনীতির অঙ্গনে শুরু হয় তার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা। গাজীপুরের পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রথমে মেয়রকে শোকজ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এরপর তাকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন দল।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলমের একটা বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে কিছুদিন আগে। সেখানে দেখা গেছে, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে জাহাঙ্গীর অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন। আমাদের চেতনার মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে তার যে কটূক্তি করেছেন। তার ওই বক্তব্য প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই আওয়ামী পরিবারসহ সর্বস্তরের মানুষ এর প্রতিবাদ করেছে। মিছিল করেছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে। দীর্ঘ দশদিন তারা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। এরপর জাহাঙ্গীরকে শোকজ করা হয়েছে। যেহেতু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বিষয়টি টেকওভার করেছে, তাই মানুষ ডাইরেক্ট আন্দোলন থেকে সরে দলের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়েছিল। সে জবাবও দিয়েছে।’
আজমত উল্লাহ বলেন, ‘এটা একেবারেই অমার্জনীয় অপরাধ। রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারা অনুযায়ী তাকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের জন্য গাজীপুরের সর্বশ্রেণির মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছে। দলীয় সভাপতির প্রতি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, ‘এটা তো সিদ্ধান্তই হয়েছে, বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব কিছুই করা হয়েছে। আইনগতভাবে যদি কোনো কিছু থাকে, ফৌজদারি অপরাধ থাকে সেটা দেখবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এটা দেখবে কিভাবে কী করা যায়। আইনের ব্যত্যয় হয়েছে কি না, এসব বিষয়ও আছে।’
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীর আলম তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে ছাত্রলীগ গাজীপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। এরপর একে একে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদক ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি ছিলেন। ছিলেন সর্বশেষ গাজীপুর সদর ও টঙ্গী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বহিষ্কার আগ পর্যন্ত ছিলেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
Leave a Reply