চ্যাম্পিয়নস লিগের একাধিক ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও, পেপ গার্দিওলার চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির সামনে ২০২১ সালের ফাইনালে আন্ডারডগ হিসেবেই নামে চেলসি।
মৌসুমে ইংলিশ লিগের শিরোপা দৌঁড় থেকে বেশ খানিকটা দূরে ছিল তারা। বাজে পারফর্মেন্সের কারণে মৌসুমের অর্ধেকে এসে তাদেরকে পাল্টাতে হয় ম্যানেজার। ঘরের ছেলে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে সরিয়ে দায়িত্ব নেন টমাস টুখেল।
এই জার্মান ট্যাকটিশিয়ানের ছোঁয়াতেই যেন পালটে গেছে চেলসি। লিগের শেষ দিনে চ্যাম্পিয়নস লিগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারা ঘরে তুলেছে ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় ট্রফি। দ্বিতীয়বারের মতো ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ চ্যাম্পিয়ন লন্ডনের ক্লাবটি।
২০১১-১২ মৌসুমের পর আবারও ইউরোপের সেরা ক্লাবের সম্মান পেল চেলসি। বিপর্যয়ের দিকে যেতে থাকা মৌসুম শেষ হলো সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে।
পোর্তোর স্তাদিও দ্রাগাওয়ে ম্যানচেস্টার সিটি নামায় একেবারে আক্রমণাত্মক একাদশ। গার্দিওলার লক্ষ্য ছিল পরিস্কার। শুরু থেকেই করবেন আক্রমণ।
অন্যদিকে, টুখেলের চেলসি খেলে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর। সিটির আক্রমণের তোড় সামলে নিজেদের আক্রমণ রচনা করেন কাই হাভের্টস-টিমো ভের্নাররা।
আক্রমণ-পালটা আক্রমণের জমে ওঠা ম্যাচে গোল পায় চেলসি। সিটির হাই লাইন ডিফেন্সকে বোকা বানানো মেসন মাউন্টের পাস পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি হাভের্টস।
প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে করা এই জার্মান ফরোয়ার্ডের গোলটিই শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে শিরোপা জয়ী।
বিরতির পর ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালায় সিটি। কিন্তু তাদের অধিনায়ক ও সেরা তারকা কেভিন ডি ব্রুইনা আহত হয়ে মাঠ ছাড়লে নিভে যায় তাদের ম্যাচে লড়াই করার আশা।
এরপরও চেষ্টা করেছেন গার্দিওলার শিষ্যরা। ডি ব্রুইনার বদলি হিসেবে নামা গাব্রিয়েল জেসুস, অভিজ্ঞ সার্হিও আগুয়েরো ও তরুণ ফিল ফোডেনের একের পর এক আক্রমণ নস্যাত করে দেয় চেলসির রক্ষণ ভাগ।
ব্লুদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা আহত হয়ে মাঠ ছাড়লেও চিড় ধরেনি রক্ষণে। ৯০ মিনিট ও ইনজুরি টাইমের বাড়তি সাত মিনিট দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে চেলসি। ফলসরূপ তাদের হাতেই ওঠে ইউরোপ সেরা দ্বিতীয় ট্রফি।
টুখেলের কাউন্টার অ্যাটাকিং কৌশলের কাছে হার মানতে হয় গার্দিওলার আল্ট্রা অ্যাটাকিং মানসিকতাকে।
নয় বছর পর ইউরোপ সেরা ক্লাবের স্বীকৃতি পেল চেলসি। পোর্ততে রচনা করলো প্রথম কোনো ইংলিশ ক্লাবের শিরোপা জয়ের ইতিহাস।
আর গার্দিওলাকে ফিরতে হবে এখন ড্রয়িং বোর্ডে। লিওনেল মেসিকে ছাড়া সাফল্য পাননা চ্যাম্পিয়নস লিগে, এই অপবাদ মুছতে তাকে আরও অপেক্ষা করতে হবে অন্তত এক বছর।
Leave a Reply