বিশেষ প্রতিনিধি , লক্ষীপুর থেকে ফিরে৷ লক্ষীপুর-২(লক্ষীপুর সদর আংশিক-রায়পুর উপজেলা) আসন নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন- সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কর্তৃক লক্ষীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপুলের সদস্য পদ বাতিল হওয়ায় আসনটি সারা দেশেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে।পাপুলকান্ডের কারনে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখিত আসন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ঐ সমস্ত লেখালেখি,স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিবিদ, প্রশাসন,গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,সাংবাদিক,আইনজীবী, শিক্ষক, চিকিসক,সমাজকর্মীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
লক্ষীপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন,রায়পুর উপজেলার ১০টি ইনিয়ন ও রায়পুর পৌরসভা নিয়ে লক্ষীপুর-২ আসনটি গঠিত।
১৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৮টিতে আওয়ালীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান।১টিতে বিএনপি।দুই উপজেলায় ও রায়পুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান।রায়পুর পৌরসভার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দীর্ঘ প্রবাস জীবন থেকে ফিরে এসেও মনোনয়ন পাওয়ার অন্যতম কারন হলো সাংগঠনিক স্থবিরতা।
১৮-২০ বছর আগে লক্ষীপুর সদর উপজেলা,রায়পুর উপজেলা ও রায়পুর পৌর আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।কমিটিসমুহ নিষ্ক্রিয়।ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে একই অবস্থা।জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন না।তবে বিভিন্ন সময়ে জেলা সদরে বসে কমিটি ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় পদবানিজ্য হয়ে থাকে।
লক্ষীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে।কতিপয় কেন্দ্রীয় নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থ ও উপঢৌকনের বিনিময়ে নেত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়।
জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির তেমন কোনো বদনাম না থাকলেও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নন এবং কোনঠাসা।লক্ষীপুরের তাহের বাহিনী ও সাঃ সম্পাদক নয়ন গং দের অপরাজনীতির কাছে সংগঠন জিম্নি।
তদবির বানিজ্য,নিয়োগ বানিজ্য,পদ বানিজ্য,মনোনয়ন বানিজ্য,দখল,টেন্ডারবাজি,চাঁদাবাজি,থানার দালালি ছাড়া কোনো সাংগঠনিক কর্মকান্ড নেই।তবে কেন্দ্রীয় নেতারা লক্ষীপুর সফরে আসলে তাদেরকে সার্বক্ষণিক পাহারা দিয়ে ঘিরে রেখে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে বিচ্ছিন্ন করে রাখা তাদের অন্যতম টার্গেট।
পাপুলকান্ডে প্রশাসন ও দুদকের অনুসন্ধানে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ৩৯ ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।আওয়ামীলীগ এর যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ,তাহের-নয়ন গংদের সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়া গেছে।তদন্ত চলছে।
তাহের-নয়ন গংদের পৃষ্ঠপোষকতায় লক্ষীপুর প্রেসক্লাবে বিএনপি-জামাতের অংশীদারিরত্ব বিদ্যমান।
সম্প্রতি লক্ষীপুর জেলা বার সমিতির নির্বাচনেও জামাত থেকে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।
মাস দুয়েক আগে নতুন জেলা প্রশাসক এসেছে।এসপি সাহেব এসেছেন দুই বছর আগে।
লক্ষীপুর জেলার রাজনীতির সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হলো সঠিক নেতৃত্বের অভাব,,সাংগঠনিক স্থবিরতা ও অপরাজনীতি/দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি।
লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্যদের তালিকাঃ
১৯৮৬ চৌধুরী খুরশিদ আলম জাতীয় পার্টি[৩]
১৯৮৮চৌধুরী খুরশিদ আলমজাতীয় পার্টি[৪]
১৯৯১মোহাম্মদ মোহাম্মদুল্লাহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ফেব্রুয়ারি
১৯৯৬ আবল খায়ের ভূইয়াবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
জুন ১৯৯৬
বেগম খালেদা জিয়াবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ উপ-নির্বাচন হারুনুর রশিদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
২০০১বেগম খালেদা জিয়াবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল২০০১ উপ-নির্বাচনআবুল খায়ের ভূঁইয়াবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল২০০৮আবুল খায়ের ভূঁইয়াবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল২০১৪মোহাম্মদ নোমানজাতীয় পার্টি (এরশাদ)২০১৮মোহাম্মদ শহিদ ইসলামস্বতন্ত্র
লক্ষীপুর-২ আসনে দীর্ঘ ২০ বছর আওয়ামী লীগের কোনোো এমপি নেই।
Leave a Reply