বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১২:৩২ অপরাহ্ন

শেখ হাসিনা সমীপে ইতালি আওয়ামী লীগ নেতার খোলা চিঠি

আফতাব বেপারী
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৩৩৫ বার

🇧🇩 বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সমীপে খোলা চিঠি। 🇧🇩
ই-মেইল ঠিকানা : feedback@pmo.gov.bd
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
পুরাতন সংসদ ভবন
তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করা এবং আপনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হাজার হাজার ইতালি প্রবাসীর পক্ষ থেকে আপনার সমীপে লক্ষ কোটি ছালাম। আজ অত্যন্ত দূঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনার গর্বের ইতালির আওয়ামীলীগ রাজনীতির করুন অবস্থা নিয়ে আপনার কাছে কিছু আরজি পেশ করার জন্য আমাদের এই খোলা চিঠি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনার যোগ্য নেতৃত্ব এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে আজ আপনি বিশ্বনেতাদের শীর্ষস্থানে। আজ আপনি বিশ্বমানবতার কণ্ঠস্বর। বাংলাদেশের স্বপ্ন আশা সব কিছু আপনাকে ঘিরেই। আপনি বাঙালীর আশা-আকাংখার প্রতীক। আপনি বাংলাদেশের উন্নয়নের নেতা। আপনি বাংলাদেশকে, বাঙালীদের এবং আপনার নেতা কর্মী ও সমর্থকদের অনেক ভালবাসেন এবং বিশ্বাস করেন। আপনার এই মহানুভবতা ও মহত্বের সুযোগ নিয়ে, কিছু বর্ণচোরা, ঘাপটি মেরে থাকা হাইব্রিড ও সুযোগ সন্ধানীরা দলে ঢুকে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, আপনার বদনাম করছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
ইতালিতে যখন ৫০ জন লোক আওয়ামীলীগ করার মতো ছিলনা, জয় বাংলা – জয় বঙ্গবন্ধু বলার মতো ছিলনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শের কথা বলার মতো এত লোক ছিলনা, তখন জিএম কিবরিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেন, কে এম লোকমান হোসেন ও হেনরি ডি কস্তার নেতৃত্বে কয়েক জন বঙ্গবন্ধুর সাহসী সৈনিকের সমন্নয়ে সর্বপ্রথম ইতালিতে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। আমাদের ইতালি প্রবাসী বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের কাছে এই চার জন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ইতালি আওয়ামীলীগের পিলার বা স্তম্ভ সরূপ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি উক্ত চার ব্যক্তি সমন্ধে অনেক অবগত আছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে, তিল তিল করে যৌবনের মূল্যবান সময় অবিবাহিত করে, আওয়ামীলীগের দুর্দিনে তাদের মেধা শ্রম বিলিয়ে দিয়ে ইতালি আওয়ামীলীগকে বিশ্বের বুকে এক মর্যাদার আসনে আসীন করেছে, আপনার বিশ্বাস, আস্থা ও সুনাম অর্জন করেছে। প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে এখন বার্ধক্যে এসে তাদের হাতে গড়া ইতালি আওয়ামীলীগের করুন অবস্থা তারা মেনে নিতে পারে নাই। যারা আওয়ামীলীগের দুর্দিনে আপনার প্রতি সম্পুর্ন আস্থা রেখে, আপনার একান্ত অনুগত হয়ে ইতালি আওয়ামীলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা কখনো আওয়ামীলীগের সুদিনে দলের সাথে বেঈমানী করতে পারেনা। কোন জামাত, বিএনপি, ও স্বাধীনতার শত্রুদের সাথে আতাত করতে পারেনা, এবং আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রও তারা সহ্য করতে পারেনা। তাইতো তারা আপনার অনুমতি সাপেক্ষে ইতালি আওয়ামীলীগের প্রায় সকল সদস্য ও সকল মুজিব আদর্শে বিশ্বাসীদের সমন্নয় করে একটি সফল, স্বার্থক ও সৌন্দর্যমন্ডিত সম্মেলন উপহার দিয়েছে। বিগত ইতালি আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সেচ্ছাচারিতায় তাদের সাথে বিগত কমিটির ১০ জন সদস্যও নাই এমনকি সাধারন সমর্থক দেরও সমর্থন নাই। তাদের নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে তারা সম্মেলন নিয়ে তালবাহানা শুরু করে দিয়েছে। ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে দশ বছর অতিক্রান্ত করার পরও পদ-পদবীর লোভ তাদের উন্মাদ করে দিয়েছে। এই দশ বছরে তারা একজন আওয়ামীলীগের কর্মী সৃষ্টি করতে না পারলেও কিছু বেয়াদব ও সন্ত্রাসী বাহিনী সৃষ্টি করেছে। তাদের কাজ হলো, যারা সম্মেলনের কথা বলে, ইতালি আওয়ামীলীগকে গতিশীল করার কথা বলে, ইতালি আওয়ামীলীগের অনিয়মের কথা বলে, পদ পদবী ব্যবহার করে যারা দূতাবাসের দালালী করে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তখন এই সন্ত্রাসী বাহিনী ফেইসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে কুৎসিত বকাবকি করে, মুরুব্বি দের অশালীন মন্তব্য করে, হুমকি ধামকি দেয় (তাদের এইসব অপকর্মের সকল ডকুমেন্টস সংরক্ষিত আছে, প্রয়োজনে আপনার দপ্তরে পাঠানো যাবে)।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
এদের কাছে প্রচুর টাকা আছে, তাই তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে। সম্মেলনের পূর্বে এরা বলতো, আমরাই সারা জীবন সভাপতি – সাধারণ সম্পাদক থাকবো, টাকা দিয়ে এদের সব কিনে নেব। ব্যাক্তি বিশেষ নির্বাচন করে এরা টাকার অংকও নির্ধারণ করে রেখেছিল! কিন্তু এরা ভুলে গিয়েছিল সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের, জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী বাহিনীকে টাকা দিয়ে কেনা যায়না।বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা তাদের অত্যন্ত ঘৃনার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি একটা কথা সব সময় বলেন, আমরাও মনে প্রানে বিশ্বাস করি, টাকা দিয়ে একমাত্র শেখ হাসিনাকে কেনা যায়না, কিন্তু অনেক নেতা নেত্রীকেই কেনা যায়! তেমনি আপনার বিশ্বাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে কিছু নেতা এদের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এদের সমন্ধে আপনাকে অবগতি করাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। এরা হলেন আপনার দেওয়া ও অনুমোদিত সর্ব ইউরোপ আওয়ামীলীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান। এরা আপনার দেওয়া আমানতের খেয়ানত করেছে। এদের ঘুষ গ্রহন, চাদাবাজি, উপঢৌকন গ্রহন আজ ইউরোপের প্রত্যেকটা লোকের মুখে মুখে। মানুষ ভয়ে ও লজ্জায় সব জায়গায় তা প্রকাশ করতে পারে না বা করে না কারন আপনার দেওয়া সাংগঠনিক পদের সম্মানের জন্য। এই দুই মহারথী ইউরোপের সব দেশে আওয়ামীলীগের দুইটা তিনটা গ্রুপ করে রাখে, এবং সে টাকা ওয়ালাদের পক্ষ অবলম্বন করে। কোন পক্ষকে মিলিমিশে কাজ করতে দেয় না। নিজেরাতো সমস্যা সমাধানের চেষ্টাই করেনা বরং সমস্যা কি ভাবে বাড়াইতে পারে এইচেষ্টা করে। তাদের দূর্নীতির কিছু তথ্য আপনার সদয় অবগতির জন্য প্রকাশ করছি। মাননীয় নেত্রী আপনি এম নজরুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান কে অনুমতি দেয়ার এক সপ্তাহ পরে প্যারিসে এসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে বিমানের ফাস্টক্লাশে টিকেট করে তারা বাংলাদেশে যান। দ্বিতীয়ত তারা বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কারী রবিন নামের এক ব্যক্তিকে স্পেন আওয়ামীলীগের সভাপতি করে টাকার বিনিময়ে। তৃতীয়ত জার্মান আওয়ামীলীগ সম্মেলনে তিনি নাজেহাল হন, পরবর্তীতে তার কুকৃতির ফিরিস্তি প্রকাশ করে, ফ্রীডম পার্টির সাথে তার সখ্যতার প্রমান প্রকাশের হুমকি দিয়ে সাবু জোরপূর্বক কর্মী বিহীন সম্মেলন করে তার কাছ থেকে কমিটির অনুমোদন নেন। চতুর্থত মাল্টা আওয়ামীলীগের সভাপতি করেন এমন ব্যক্তিকে যে আপনাকে সবসময় বকাবকি করতো এবং জনগনের কাঠগড়ায় দাড় করাতো আপনার বিচার চেয়ে, এবং সহ সভাপতি করা হয় আপনাকে খুন করার পরিকল্পনা কারী মুফতি হান্নানের আপন ভাতিজাকে। এমন অসংখ্য অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে আছে। আপনার ইদানিং কালের প্যারিস সফরের সময় প্যারিসে ইতালি আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতৃবৃন্দ তার সাথে বৈঠক করে ইতালি আওয়ামীলীগ এর ব্যাপারে একটি সুন্দর সমাধানের জন্য আহবান জানায়, কিন্তু এম নজরুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান তাতে সাড়া দেয় নাই। নজরুল ইসলাম গং ২০১০ সালের পর থেকে যারা আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছে এইসব নব্য আওয়ামীলীগার দের প্রধান্য দিয়ে ইউরোপ আওয়ামীলীগকে গঠন করার এক নীল নক্সার মিশনে নেমেছে। আপনি দয়া করে একটু তদন্ত করে দেখবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের সাধারণ জনগন ও আমজনতার মনে সন্দেহ হচ্ছে এটা কোন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। ইউরোপের সব দেশে হাইব্রিডদের নেতৃত্বে বসিয়ে তাদের পাল্লা ভারী করতেছে। খন্দকার মোশতাকরা যুগে যুগে নিজেদের দল থেকে, কাছের লোকদের থেকে জন্ম নেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের মতো নগন্য ও ক্ষুদ্র সমর্থকদের কথা একটু ভেবে দেখবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
বঙ্গবন্ধুকে আমরা ভালবাসি, আপনাকেও আমরা ভালোবাসি- এই ভালবাসা দেশের জন্য, আদর্শের জন্য, একটি সুন্দর ও সম্মানীত জাতি হিসাবে বাংলাদেশ কে গড়ে তোলার জন্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাকে বাস্তবে পরিনত করার জন্য। আমাদের ভালবাসার পরিসরটি অনেক অনেক বড়। তাই আপনার কিছু হলে, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আপনার প্রিয় সংগঠন আওয়ামীলীগের কিছু হলে আমাদের কষ্ট হয়। আমাদের পদ পদবী কিছু চাইনা বা পদ পদবীর লোভও আমাদের নাই। তাইতো আমরা পদ পদবীর জন্য নীতি বিবর্জিত কোন কাজ করবো না। নেতারাই স্বার্থের জন্য নীতি পালটায়, সাধারন সমর্থকরা না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তাইতো আপনার কাছে আমাদের একান্ত নিবেদন, আপনি নিজ হাতে অথবা নির্দেশ দিয়ে ইতালি আওয়ামীলীগের একটা সমাধান দান করুন। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
ইতালিস্থ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শে বিশ্বাসী দের পক্ষে-
আফতাব বেপারী
রোম
ইতালি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2023 DeshPriyo News
Designed By SSD Networks Limited
error: Content is protected !!