বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন

৩৩ বছর পর ইতালির লীগ চ্যাম্পিয়ন নাপোলি

প্রথম আলো
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩
  • ১৩৯ বার

৩৩ বছর! কত কিছু হয়ে গেল এ সময়ে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সৃষ্টি হয়েছে, ৯/১১ বদলে দিয়েছে পুরো পৃথিবীকে, করোনা থমকে দিয়েছিল সময়কেও, লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর বছর পর এনে দিয়েছেন বিশ্বকাপ শিরোপা, এমনকি যে ডিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে নাপোলি সবশেষ সিরি ‘আ’ শিরোপা জিতেছিল সেই ম্যারাডোনাও পাড়ি জমিয়েছেন অন্য লোকে।

এমন আরও বহু স্মরণীয় ঘটনার জন্ম হয়েছে গত ৩৩ বছরে। হয়নি শুধু নাপোলির আরেকটি লিগ শিরোপা জেতা। তবে কিছুটা দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত অবসান ঘটেছে অপেক্ষার। ১৯৯০ সালে ম্যারাডোনার হাত ধরে শিরোপা জয়েরা পর আবারও ইতালিয়ান লিগের ট্রফিটি নিজেদের করে নিল নাপোলি।

মঞ্চটা প্রস্তুতই ছিল, দীর্ঘায়িত হচ্ছিল শুধু উৎসবের অপেক্ষাটুকু। গত রোববার সালেরেন্তিনার সঙ্গে জিতলেই নিশ্চিত হতো শিরোপা। কিন্তু ৮৪ মিনিটে গোল খেয়ে বসলে বাড়ে নাপোলির উদ্‌যাপনের অপেক্ষা। গতকাল রাতে মাঠে না নেমেই উৎসব করতে পারত নেপলসবাসীরা। এবার সেই উৎসবে বাঁধ সাধে সাসুসোলোর বিপক্ষে লাৎসিওর জয়। আজ রাতেও মনে হচ্ছিল নাপোলির সব উৎসব আয়োজনে বুঝি পানি ঢেলে দিতে যাচ্ছে উদিনেস। শুরুতে যে পিছিয়ে পড়েছিল নাপোলি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে সমতায় ফিরিয়ে গোটা ইতালিকে যেন জাগিয়ে তুলে নেপলসের ক্লাবটি।

ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই গ্যালারিজুড়েই একটাই আওয়াজ ‘আমরাই ইতালির চ্যাম্পিয়ন।’ উদিনেসের দাসিয়া স্টেডিয়াম ছাড়িয়ে এই ধ্বনি যেন ছড়িয়ে পড়ছিল গোটা ইতালিতে। বহু আগে ম্যারাডোনা নামক এক জাদুকরের ডাকে জেগেছিল নোংরা ও মাফিয়াদের শহর হিসেবে পরিচিত নেপলস, আজ জাগল আরেকবার। আজ আরেকবার হবে শিরোপা উৎসব।

এদিন উদিনেসের মাঠে খেলা হলেও, ভক্ত-সমর্থকদের ঢল নেমেছিল নেপলসের ডিয়েগো আরামান্দো স্টেডিয়ামেও। নাপোলির এক পয়েন্টের অপেক্ষায় তাঁরা যেন প্রাথর্নায় বসেছিল। এবার আর নিরাশও হতে হয়নি। ৩৩ বছর পর যে কথা রাখল ম্যারাডোনার স্মৃতিবিজরিত ক্লাবটি।

ম্যাচের শুরু থেকে নাপোলি দাপট দেখালেও, স্রোতের বিপরীতে গিয়ে গোল করে এগিয়ে যায় উদিনেস। ডি-বক্সের ভেতর বলে পেয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে উদিনেসকে এগিয়ে দেন সান্দি লভরিক। এ সময় নাপোলিকে ভয় দেখাচ্ছিল উদিনেসের পরিসংখ্যান। সিরি ‘আ’তে ঘরের মাঠে সবশেষ যে ৬ ম্যাচে তারা আগে গোল করেছে, সেসব ম্যাচে হারেনি ক্লাবটি। তবে নাপোলির শিরোপা উৎসব বিলম্বিত করতে হলে তাদের এদিন জিততেই হতো।

ম্যাচের ২২ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করে নাপোলি। যদিও সে আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। ভিএআরের সাহায্য নিয়েও সুফল পায়নি লুসিয়ানো স্পালেত্তির দল। ৩১ মিনিটে নিজেদের ভুলে দ্বিতীয় গোলটি প্রায় হজম করেই ফেলেছিল নাপোলি। সে যাত্রায় দলকে বাঁচিয়ে দেন দলের গোলরক্ষক। পরের মিনিটে কাছাকাছি গিয়ে গোল বঞ্চিত হয় নাপোলি। চেষ্টা করেও দলকে সমতায় ফেরাতে পারেননি ভিক্তর ওসিমেন। প্রথমার্ধের বাকি সময়েও দাপট ছিল নাপোলি। কিন্তু সোনার হরিণ হয়ে উঠা গোলটির দেখা তারা আর পায়নি।

বিরতির পর নাপোলির গোল নামক সেই সোনার হরিণের খোঁজ শেষ হয়। ৫২ মিনিটে পুরো মৌসুমে দারুণ খেলা ওসিমেনের গোলই নাপোলিকে সমতায় নিয়ে আসে। আর এই গোলই নাপোলিকে তৈরি করে দেয় উৎসবের উপলক্ষ। এরপরও ব্যবধান বাড়ানোর অনেক সুযোগ পেয়েছিল নাপোলি। কিন্তু ম্যাচের বাকি সময়ে সে সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ‍যদিও তাতে শিরোপা উৎসবে কোনো সমস্যা হয়নি। ম্যাচ থেকে পাওয়া একমাত্র পয়েন্টটি নাপোলিকে মাতিয়ে তুলেছে উৎসবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2023 DeshPriyo News
Designed By SSD Networks Limited
error: Content is protected !!