২০১৯ এর ডিসেম্বরে চীনের উহান রাজ্যে প্রথম ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। এরপর এই মরণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। ২০২০ সালের মার্চের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর সারাদেশে সৃষ্টি হয় এক ভয়াবহ পরিস্থিতি।
করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িতদের মাঝেও তৈরি হয় অজানা আতঙ্ক। অদেখা-অজানা ভাইরাসের আতঙ্কে মানুষ হয়ে পড়েন ঘরবন্দি। তখন থেকেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় চিকিৎসকদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করে যান ঝরনা বেগম, তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের করোনা ইউনিটের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মহামারির পুরো সময়টাতে একমাত্র সন্তান ও স্বামীকে বাসায় রেখে মরণাপন্ন রোগীদের সেবা করেছেন এই নার্সিং কর্মকর্তা। মহামারীর দুঃসময়ে যখন মানুষ ঘরবন্দী, প্রিয়জনকেও এড়িয়ে চলেছেন সেই সময়ে অনন্য মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
ঝরনা বেগম করোনাকালে কঠিন এই দায়িত্ব পালন করায় সব মানুষের প্রশংসা যেমন পেয়েছেন তেমনি পেয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিও। উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন তাকে সম্মাননা পদক প্রদান করেছে। মুজিববর্ষ, মহান স্বাধীনতা দিবস ও নারী দিবস উপলক্ষে গত ১৯ মার্চ আয়োজিত আলোচনা, গুনীজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাকে এ সম্মাননা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রদান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে করোনা ইউনিটের ইনচার্জ নার্সিং কমকর্তা ঝরনা বেগমের হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান এমপি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম, ঢাকা বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হামিদা খানম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এবং উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন আনোয়ারা বেগম নিপা প্রমুখ।
সম্মাননা পদক পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় নার্সিং কমকর্তা ঝরনা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নার্সিং পেশায় নিয়োজিত আছি। মহামারীর মতো এ রকম একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে সারা বিশ্বে তা ছিল কল্পনারও বাইরে। মানবিক দুর্যোগে মানুষের সেবাই করাই ছিল আমার লক্ষ্য। এ সময় নিজের বা পরিবারকে নিয়ে ভাবিনি। আমি চেয়েছি আমার করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিয়ে প্রতিটি মানুষ যেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিনসহ করোনা ইউনিটের করলের সার্বিক সহযোগিতায় করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। এখানে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছে তাদের আমরা ভালো ভাবে সেবা দিয়েছি।
Leave a Reply