রেজাউল করিম শামীম :এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম,কুমিল্লা জজকোর্টের বর্তমান পিপি।প্রিয় সেলিম ভাইয়ের সাথ বুধবার বিকালের পড়ন্ত বেলায় দেখা হলো কুমিল্লা টাউন হল মাঠে। সেখানে কুমিল্লার জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা, সকলের প্রিয় মুখ সফিকুল ইসলাম সিকদারের জানাজা। উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ।সেসুবাধে অনেকের সাথেই আমার দেখা।হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিকথা, অনেকেই তুলে ধরেন।
সেলিম ভাইও বলছিলেন সেদিনের কথা।যে রাতে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নির্বাচনের জন্য ‘সাবজেক্ট কমিটি’র সভা বলেছিলো।সেদিনই আমাকে সভাপতি এবং সফিককে সাধারণ সম্পাদ করে ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছিলো।সেই আলোচিত স্থানটির কথাও বললেন সেলিম ভাই। জায়গাটি ছিলো মোগলটুলির আলমগীরের বাসা।আলমগীর সেলিম ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
এ কমিটিই ‘৭৫এর কলঙ্কময়,মর্মন্তুদ ঘটনার পর পুর্নগঠিত ছাত্রলীগের প্রথম কমিটি। সেলিমভাই,বাহার ভাই,কবির ভাই,হান্নান দিদার,ইউনুস ভূইয়া,ফারুক,রিফাত,জসিম মাওলা,মোস্তাক, টিটু,রচি,শ্যামল,তপন,হুমায়ুন ,সানাই,তাজুল ইসলাম জাহাঙ্গীর,লাকি ভাই, বারেক ভাই,শাহজাহান ভাইসহ আরো কয়েকজন।অত্যন্ত দুঃসময়ে শহরের পাড়ায় পাড়ায় স্থানীয়দের নিয়ে ছোট আকারে সভা করে করে ছাত্রলীগ সংগঠিত করা হয়।এরপরই এই কমিটি।
এই কমিটির মাধ্যমেই ভিক্টোরিয়া কলেজ সংসদের নির্বাচনে সফিকুল ইসলাম সিকদার এবং আবিদুর রহমান জাহাঙ্গীর কে ভিপি ও জিএস হিসাবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিলো। আর তারা বিপুল ভোটে নির্বাচীতও হয়েছিলো।
মনোয়ন দেয়ার সময়ের একটি ঘটনা আমার এখনো মনে পরে।আর তার মধ্যে দিয়ে সফিকের আবেগপ্রবণ এবং সংবেদনশীল মানবিক দিকটি ফুটে উঠে।ঘটনাটি এরকম।ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন কালে আমার সবসময় চেষ্ঠা ছিলো সবকিছুই নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে পরিচালন করা।তো কলেজ সংসদ নির্বচনের মনোনয়নের সময়, মনোয়ন বোর্ড,মনোনয়ন ফর্ম পূরণ,ইন্টারভিউ নেয়া ইত্যাদি সবকিছুই নিয়মমাফিক করা হয়।সেদিন ভিপি পদে সফিক আবেদন করে। কিন্তু জাহাঙ্গীর ভিপি ও জিএস দুই পদেই মনোয়ন পত্র জমা দেয়।ইন্টারভিউর পর দেখা গেলো,সফিক পাশের রুমে গিয়ে কাঁদছে।পরে সে জানালো,তার ধারনা তাকে মনোনয়ন দেয়া হবেনা।কারণ হুমায়ুন আমার ছোটবেলা থেকেই বন্ধু,তার ভাই জাহাঙ্গীর। তার প্রতি আমার দুর্বলতা আছে।তাছাড়া সেলিম ভাইসহ আরো ক’দন নেতার আপত্তি আছে তাকে নিয়ে।।যা হোক অনেক কষ্টে তাকে বাস্তবতা বুঝানো গেলো।পরে ভিপি হিসাবে তার নাম ঘোষনা করার পর সে শান্ত হলো।
এমনিই কোমল হৃদয়ের সফিককে কি করে ভোলা যায়।
সেই সফিকের জানাজা উপলক্ষে ঢাকা থেক টাউনহল মাঠ।অনেকের সাথেই দেখা,কথা হলো।নাছির ছাড়াও,ডা.মোসলেহ উদ্দিন,জাকির হোসেন,আবিদুর রহমান জাহাঙ্গীর,কবীর শিকদার,শাহজাহান চৌধুরী,হেলাল উদ্দিন,আহসানুল কবির, রূনু, দেলোয়ার হোসেন টুটুল,বশির আহাম্মদ,সাংবাদিক সোহাগ,মহিউদ্দিন মোল্লা,চন্দন দাস,সেলিম মাওলাসহ এমনি অনেকের সাথেই দেখা হলো-যাঁদের সাথে বহুকাল দেখা হয়নি।তাদের সাথে অবশ্য আবারো দেখা হবে।
কিন্তু, হীমবাক্সে সাদা কাপড়ে মেড়ানো সফিকের সাথেতো শেষ দেখা।আর কোনদিনই দেখা হবেনা। ক্ষোভ,অভিমান আর চরম হতাশা নিয়েই সফিক, চিরবিদায় নিলো সবার কাছ থেকে।মহান আল্লাহ্ সফিককে শান্তিতে রাখুন,তাকে বেহস্থ দান করুন।