জাকির হোসেন মারুফঃ ১৫ বছরে তো অনেক উন্নয়ন করলাম,জাতিগঠন কি করতে পারলাম?
কোটা সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।কিন্তু এটিকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যে ভাষায় মন্তব্য দেখছি তা খুবই উদ্বেগজনক!সাধারণ ছাত্রের ব্যানারে যারা আন্দোলন করছে তারা জানেও না এর পেছনে রয়েছে সুনির্দিষ্ট ও চিহ্নিত গোষ্ঠীর রাজনৈতিক এজেন্ডা।
জাতিগঠন প্রক্রিয়া রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ।সুতরাং আমাদের রাজনীতির একটি সামগ্রিক মূল্যায়ন করা অতীব জরুরী!
‘৭১ এ মাত্র সাড়ে চার লক্ষ ব্যক্তি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
১৯৭২-৭৫ এ অতি স্বল্প সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকুরীতে নিয়োগ পেয়েছেন।’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯৯৬ এ জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আসার পূর্ব পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন চরম অবহেলিত।শুধু তাই নয় জিয়া-এরশাদ-খালেদা সরকারের আমলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে।কোনো প্রকার রাষ্ট্রীয় সম্মান ছিল না।
আমার জানা মতে এখন খুব স্বল্প সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার বংশধরেরা বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে।সংখ্যাটি অতি মাইক্রোসকপিক।নামে মাত্র থাকা ৩০% কোটার ৮-১০% পূরণ হয় কি না সন্দেহ আছে!আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্য কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।বরং নিয়োগ পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত যোগ্যতার মানদন্ড পূরণ হলে সরাসরি তাঁদের নিয়োগ দেয়া উচিত।
তথাকথিত মেধাবীরা মেধার সংজ্ঞা আদৌ জানেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।সমাজের অগ্রসর ব্যক্তিবর্গের সন্তানরা ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়ে ভালো ফলাফল করে।তার মানেই কি তিনি মেধাবী?রাষ্ট্রের দায়িত্ব সকল নাগরিকের জন্য বৈষম্যহীন সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।রাষ্ট্রের সেই সক্ষমতা যতদিন না হবে ততদিন সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সমাজের অনগ্রসর অংশের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু রাখা বাঞ্ছনীয়।
আরও একটি বিষয় অনুধাবনযোগ্য।কর্মসংস্থান নিয়ে সরকারের গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত।ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়া হলে কেউ সস্তা জনপ্রিয় আন্দোলনের সুযোগ নিতে পারবে না।প্রতিটি নাগরিকের জন্য শিক্ষাশেষে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাকির হোসেন মারুফঃসভাপতি,মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল আবেদীন পাটওয়ারী ফাউন্ডেশন।
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ